গতপর্বে বলেছিলাম কিছু প্রোডাক্টিভ টুল নিয়ে হাজির হব, যেগুলা আপনার প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য মাস্ট-ইউজ লিস্টে রাখাটা মাস্ট। আজকে সেই টুলগুলো নিয়ে হাজির হলাম।
প্রথমে আমাদের জানতে হবে, আমাদের প্রোডাক্টিভ হওয়ার পেছনে বড় বাধা কি । সেই বাঁধাগুলো রিমুভ করতে পারলেই আশা করা যায় আমাদের প্রোডাক্টিভি বাড়োবে। আমাদের প্রোডাক্টিভিটির সবচেয়ে বড় বাঁধা হচ্ছে, ডিস্ট্র্যাকশন। খুব কম সময়ই আমরা একটা কাজে এটেনশান ধরে রাখতে পারি, বিশেষ করে কাজটা যদি হয় বোরিং।
আপনি হয়তো আপনার ডেস্কে বসে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করছেন ফাইলপত্র নিয়ে। অথবা কোনো জরুরী হিসেব নিকেশ কষছেন। হঠাত আর মন বসছে না। ইচ্ছা হচ্ছে ল্যাপটপে বা মোবাইলে ফেসবুকে একটু ঢু মেরে দেখতে কি হালচাল। ৫ মিনিট দেখবেন বলে দেখা শুরু করলে, কিন্তু দেখা শেষে খেয়াল করলেন ৩০ মিনিট চলে গেসে। এটা খুবই কমন একটা সিনারিও। এভাবেই কিন্তু প্রোডাক্টিভিটিটা নষ্ট হয়। এই ডিস্ট্র্যাকশনটা ব্লক করার জন্য আপনি ইউজ করতে পারেন freedom অ্যাপ। চমৎকার এই অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি distracting site/app এর একটা লিস্ট করতে পারেন। তারপর কাজের শুরুতে সেই অ্যাপগুলো কতক্ষন ব্লক রাখতে চান তা সেট করে দিয়ে স্টার্ট করে দিলেন, আর সেই সাথে সিলেক্ট করে দিলেন কোন কোন ডিভাইসে অ্যাপ/সাইটগুলো ব্লক রাখতে চান। ব্যস, আপনাকে আর চিন্তা করতে হবে, ফেসবুকে ঢু মারতে চাইলেও আর যেতে পারবেন না। কারণ, ঐ সাইটতো ব্লক। 😛
এই অ্যাপটির হোমপেজঃ https://freedom.to/ , এখান থেকে আরো ডিটেইলসে জানতে পারবেন।
প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর আরেকটা উপায় হচ্ছে, যেই কাজ করছেন, তা শুরুর আগেই ঐ কাজের জন্য টাইম এস্টিমেট করা, আপনার মাইন্ডসেটেই থাকবে যে, হ্যা, আমি এই সময়ের মধ্যে এই কাজটা শেষ করব। কাজটি করার সময় টাইম ট্র্যাক করতে হবে। তা না হলে কিন্তু সমস্যা। আপনি ভেতর থেকে কাজটা শেষ করার তাগিদ পাবেন না, যদি না আপনি টাইম লিমিট করে দেন আর টাইম ট্র্যাক করেন। এই টাইম ট্র্যাকের কাজটি করার জন্য ইউজ করতে পারেন Clockify. এটার ক্রোম এড অনও আছে। চাইলে ইন্সটল করে, কাজ শুরুর পর, Clockify রান করে দিন। সে-ই টাইম ট্র্যাক করবে।
Clockify এর হোমপেজঃ https://clockify.me/chrome-time-tracking এখান থেকে আরো ডিটেইলস জানতে পারবেন।
দিনের শুরুতে আপনি কি কি কাজ করবেন, তার লিস্ট কোথায় করেন ? নাকি মাথাতেই রেখে দেন কোথাও না টুকে। যদি তা হয়, তবে লিস্টের অর্ধেক টাস্কই নাই হয়ে যাওয়ার কথা ! যাহোক, এটার জন্য আপনি ইউজ করতে পারেন Notion. নোট নেয়া, টাস্ক ম্যানেজমেন্ট এবং প্ল্যানিং এর জন্য এটা চমৎকার একটা প্লাটফর্ম। অনেকেই হয়তো জানেন এটার ব্যাপারে।
Notion এর হোমপেইজঃ https://www.notion.com/
বাইদ্যাওয়ে Notion with AI এ কিন্তু আরো বেশ কিছু ফিচার আছে। নোট নেয়া, আইডিয়া জেনারেট করা এবং অটোমেটিক সামারি ক্রিয়েশন এগুলা করতে পারবেন এর মাধ্যমে। এটার লিঙ্কঃ https://www.notion.com/product/ai
এছাড়াও আমি পার্সোনালি যেটা ইউজ করি, তা হচ্ছে TickTick (TikTok না কিন্তু 😛 ), নামটা অদ্ভুত, কিন্তু বেশ কাজের। ফ্রি ভার্সনেই কাজ চলে যায়। ডেস্কটপ এবং মোবাইল অ্যাপ , দুইটা ভার্সনই আছে। টাস্ক অটোসিঙ্ক করে নেয়। টাস্কলিস্ট বানানোর পাশাপাশি রিমাইন্ডার সেট করা যায়। আমি এটা ইউজ করি UI/UX friendly হওয়ার জন্য। খুবই স্মুথ।
TickTick হোমপেইজঃ https://ticktick.com/
এছাড়া গুগল ক্যালেন্ডারতো আছেই।
বস মিটিং কল করসে, মিটিং অনেক লম্বা সময়ের জন্য হবে। এত দীর্ঘ সময়ে এত পয়েন্ট উঠে আসবে এগুলা মনে রাখা তো ঝামেলা, তাই নোট নেয়া লাগে। হাতে কলমে নোট নিতে ঝামেলা, টাইম বেশি লাগে আবার মিটিংয়েও Concentrate করা যায় না। এটার জন্য আপনি ইউজ করতে পারেন Otter । এটা একটা AI powered টুল যার মাধ্যমে আপনি ট্রান্সক্রিপশন করা যায় এবং মিটিঙয়ের নোটও নেয়া যায়। বিস্তারিত পাবেন ওদের লিঙ্কেঃ https://otter.ai/
প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য আছে সবার প্রিয় Trello with AI power ups. এটার কথা আশা করি নতুন করে বলতে হবে না। এটা সবারই অলটাইম favorite.
Trello এর হোমপেইজঃ https://trello.com/
এতক্ষন যেই কয়টা টুলের কথা বললাম, এগুলা দিয়ে তো আপনি ডিস্ট্যাকশন রিমুভ করলেন। কিন্তু আরেকটা ব্যাপারে সবসময় সিরিয়াস থাকতে হবে, তা হচ্ছে কম্যুনিকেশন। প্রোফেশনালিজমের এই পার্টটাতে আমরা বাংগালীরা বেশির ভাগ সময়ই ধরা খাই। এটার জন্য তো কমন টুল ইউজ করবেন, Slack এবং whatsapp.
এই সব অ্যাপগুলা একসাথে ইউজ করার পরে প্রোডাক্টিভিটি কি ডাউন হবে ? কি মনে হয় ? হ্যা, হতেই পারে। যদি আপনার নিজের ভেতর থেকে তাগিদ না পান, যদি procastination হয় আপনার নিত্যসংগী। যদি তা না হয়, তবে আশা করা যায় You will be at your peak in productivity .
Stay productive !